জাকির হোসেন আজাদী : আসন্ন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) নির্বাচন-২০২২ এ ঐতিহ্য রক্ষা ও অধিকার আদায়ের অঙ্গীকার প্রদান করায় সাধারণ সম্পাদক পদে তুমুল আলোচনায় আছেন সাবেক সংগ্রামী যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী জহিরুল ইসলাম। তার সঙ্গে একান্ত কথা হয়। সেসময় তিনি সাংবাদিকদের অধিকার আদায় ও এই মহান পেশার সম্মান অক্ষুন্ন রাখতে তাঁর নানাবিধ পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, অধিকার আদায়ের এই সংগঠনটি আমাদের পূর্বসূরিরা একান্ত আন্তরিকতা, সততা, নিষ্ঠা এবং আদর্শিক চেতনায় পেশাদার ও সাংবাদিক কল্যাণবান্ধব প্রাণের সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলেছেন”।
তিনি আরও বলেন, ঐতিহ্যবাহী এ সংগঠনের সদস্য হিসেবে আমরা সম্মান ও গৌরববােধ করি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে সদস্যদের ইউনিয়ন বিমুখতা প্রমাণ করে সেই সম্মান ও গৌরবে ছেদ পড়েছে। হারানাে ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে সর্বাত্মক চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, স্কুল-কলেজ ভর্তি, চাকরি, বিদেশ ভ্রমণসহ প্রযােজ্য ক্ষেত্রে প্রত্যয়নপত্র প্রাপ্তির সুবিধা থাকবে। মৃত সদস্যদের পরিবারও উল্লেখিত সুবিধা পাবেন। আমি সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হলে ডিইউজেকে আরও শক্তিশালী ও কার্যকর করার জন্য প্রাণান্তর চেষ্টা করে যাৰ।
এবার তিনি তাঁর পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে বলেন, সম্মানীত সদস্যদের ভাবনার প্রতিফলনকে বাস্তবে কার্যকর করতে কিছু পরিকল্পনা নিয়েছি –
• সম্মানীত সদস্যদের ডিজিটাল স্মার্টকার্ড দেয়ার উদ্যোগ নেব, যা ইউনিয়নের নিজস্ব সফটওয়্যারের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। প্রত্যেক সদস্যের জন্য। নির্দিষ্ট কোড নাম্বার থাকবে। এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে সদস্যদের সিনিয়রিটি নির্ধারণ করা যাবে এবং সদস্যদের প্রত্যয়নপত্র, তাদের সন্তানদের।
• সরকারি হাসপাতালে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সদস্যদের চিকিৎসাসেবা ও বিনামূল্যে ওষুধের ব্যবস্থা করা হবে এবং সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে। নামমাত্র মূল্যে ডায়াগনস্টিক/পরীক্ষা-নিরীক্ষার উদ্যোগ নেয়া হবে। ৩ সদস্যদের বীমা সেবার আওতায় আনা হবে।
• সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে সাংবাদিক সন্তানদের জন্য পােষ্য কোটা, সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সদস্য সন্তানদের ভর্তির কোটা চালুর ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়াও মৃত সদস্যদের সন্তানদের অতীব প্রয়ােজনীয় সুবিধাদি নিশ্চিত করা হবে।
• বেকার সাংবাদিকদের তালিকা করে যােগ্যতা অনুসারে তাদের কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নেয়া হবে।
• কল্যাণ ট্রাস্টের ফান্ড থেকে সহায়তা যাতে উপযুক্ত ব্যক্তি পান এর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
• সিনিয়র, প্রবীণ ও কর্মাহত সাংবাদিকদের সরকার থেকে সম্মানীভাতা পাওয়ার উদ্যোগ নেয়া হবে।
• সদস্যদের আবাসন সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে ভাড়ার টাকায় সরকারি ফ্ল্যাট পাওয়ার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে।
• পত্রিকা, অনলাইন নিউজ পাের্টাল ও টেলিভিশনে যারা এখনাে নিয়ােগপত্র পাননি, তাদের তালিকা করে মালিকপক্ষের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলােচনার মাধ্যমে তা আদায় করা হবে এবং একইভাবে যারা কম বেতনে চাকরি করছেন, তাদের ওয়েজ বাের্ডের আওতায় আনতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হবে।
• সম্পাদনা সহকারী বিভাগের সহকর্মীরা পত্রিকাকে নির্ভুল করার মতাে গুরুদায়িত্ব পালন করেন। পাশাপাশি পত্রিকা ও টিভি চ্যানেলের ক্যামেরা পারসনরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করে থাকেন, কিন্তু তাদের বেতনভাতা খুবই কম। এ বিষয়ে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে আলােচনার মাধ্যমে যৌক্তিক সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হবে।
• কোনাে সাংবাদিক যেন বিনা কারণে চাকরিচ্যুত না হয়, সে জন্য সরকার, মালিকপক্ষের সাথে আলােচনাপূর্বক সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
• সদস্যদের সেবাদানে ডিইউজে অফিসে ইউনিয়নের উদ্যোগে নামমাত্র মূল্যে চা-নাস্তার ব্যবস্থা করা হবে।
• বিএফইউজের সঙ্গে আলােচনা করে ডিইউজের অফিসের পেছনের অংশ বাড়ানাের উদ্যোগ নেয়া হবে।
• সাংবাদিকদের অধিকার তথা ন্যায্য পাওনাদি আদায়ে দায়েরকৃত মামলা ৯০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেয়া হবে।
• ইউনিয়ন কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধু কর্নার নামে একটি লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা করা হবে। যেসব পত্রিকায় ডিইউজের ইউনিট গঠন করা সম্ভব হয়নি, সেখানে নতুন ইউনিট গঠনের উদ্যোগ নেয়া হবে। টেলিভিশন ও নিউজ পাের্টালে নির্বাহী কমিটির মাধ্যমে সাংবাদিকদের অধিকার আদায়ে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
• ট্রেড ইউনিয়ন সদস্যদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অমিমাংসিত গণমাধ্যমকর্মী আইন, জাতীয় সম্প্রচার আইন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ধারা সংশােধন, ওয়েজ বাের্ড বাস্তবায়নের দাবিতে যৌক্তিক আন্দোলন ও কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
সব শেষে তিনি সকল সদস্যের উন্নত জীবন ও সুস্বাস্থ্য কামনা করেন। সেইসাথে দোয়া ও ভোট প্রত্যাশা করেন। সংগ্রামী এই নেতার জন্য নিরন্তর শুভকামনা।