মোঃ মাহবুবুল আলম খানঃ
র্যাব-১২’র অভিযানে সিরাজগঞ্জে অজ্ঞান পার্টির সক্রিয় ৩ সদস্যকে আটকসহ ১ টি বাস জব্দ করেছে।
গত (১৩ সেপ্টেম্বর) সোমবার সকাল ০৯:২৫ ঘটিকার সময় ভিকটিম মোঃআলমগীর হোসেন, পিতা মৃত জাকের হোসেন, সাং- শিকারপাড়া, থানা- গুরুদাসপুর, জেলা- নাটোর। কাচিকাটা হতে রাজদীপ পরিবহনের একটি বাসযোগে ব্যবসায়িক কাজে বগুড়ার উদ্দেশ্যে রওনা করেন। বাস চলাকালীন সময়ে একজন বই বিক্রেতা হকার গাড়ীতে থাকা ১০ থেকে ১২ জন যাত্রীকে প্রথমে বই পড়ার জন্য দেয় এবং বই পড়াকালীন সময়ে বিশেষ কৌশলে ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার জন্য বলে কিন্তু তিনি তা গ্রহণ করেন না। একই সাথে থাকা অন্যান্য বই পড়ুয়া যাত্রীগণ ইসবগুলের ভুষি পানির সাথে গ্রহণ করে। পরবর্তীতে কিছু সময় অতিবাহিত হলে উক্ত হকার সবাইকে বিশেষ রোগের চিকিৎসার কথা বলে হালুয়া পরিবেশন করে এবং সবাইকে অবগত করে যে এই হালুয়া খেলে তাদের রোগ নিরাময় করা সহজ হবে। হকারের কথায় উৎসাহিত হয়ে বাসের ড্রাইভার ও সুপারভাইজার সহ অন্যান্য যাত্রীগণ খাবার হিসেবে হালুয়া গ্রহণ করে। সকলের হালুয়া খাওয়া শেষ হলে ভিকটিমকে হকার হালুয়া খাওয়ার জন্য উৎসাহিত করে। ভিকটিম হালুয়া খেতে অসম্মতি প্রকাশ করলে সুপারভাইজার তার দিকে এগিয়ে আসে এবং সুপারভাইজার তাকে হালুয়া খেতে বাধ্য করে। হালুয়া খাওয়ার কিছুক্ষণ পর তিনি উপলব্ধি করতে পারেন যে তার মাথা ব্যথা হচ্ছে সাথে নানাবিধ সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তাই তিনি তাড়াশ থানাধীন মান্নান নগরে গাড়ী থেকে নামার জন্য গাড়ীর গেটে পৌঁছায় কিন্তু গেটে থাকা সুপারভাইজার তাকে গাড়ী থেকে নামতে না দিয়ে জোর করে অন্য একটি সিটে বসিয়ে দেয়। তারপর তিনি অচেতন হয়ে যায়। অচেতন থাকাকালীন সময় ভিকটিমের সঙ্গে থাকা ৩ লক্ষ ২ হাজার টাকাসহ REDMI GO মোবাইল ফোন উক্ত আসামীরা ছিনিয়ে নেয়। পরবর্তীতে দুপুর ০১.৩০ ঘটিকার সময় নাটোর জেলার গুরুদাসপুর থানাধীন কাচিকাটা বাসস্ট্যান্ডের পাশ্বে স্থানীয় লোকজন তাকে অচেতন অবস্থায় পায় এবং তার বাসায় খবর পাঠাইলে তার পরিবারের সদস্যরা তাকে নিয়ে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা গ্রহণ শেষে তিনি গত ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ ইং তারিখ শুক্রবার সকাল ১০ ঘটিকার র্যাব-১২ সিরাজগঞ্জের নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এর ধারাবাহিকতায় গত (১৭ সেপ্টেম্বর) শুক্রবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১২ এর স্পেশাল কোম্পানীর ভারপ্রাপ্ত কোম্পানী কমান্ডার সহকারী পুলিশ সুপার মিঃ জন রানা এর নেতৃত্বে স্পেশাল কোম্পানীর একটি চৌকষ আভিযানিক দল সিরাজগঞ্জ জেলার সলঙ্গা থানা ধীন চরিয়া কালিবাড়ি গ্রামস্থ নাটোর হতে ঢাকাগামী মহাসড়কের উত্তর পাশ্বের মোঃ মুক্তার হোসেন এর মুদির দোকানের সামনে পাকা রাস্তার উপর অভিযান চালিয়ে অজ্ঞান পার্টির সক্রিয় ৩ সদস্য গ্রেফতার করেছে। এসময় তাহাদের সঙ্গে থাকা ১ যাত্রীবাহী বাস যার রেজি নাম্বার- রাজ মেট্রো-গ ১১-০১৩২, নগদ-২,১৩৪/- টাকা এবং ০৩ টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামী- ১। শ্রী সুজন কুমার দাস (২৫), পিতা বাবুল কুমার দাস ওরফে আপন দাস, সাং- জোয়ারী, ২। মোঃ বিপ্লব পাঠান (৪৩), পিতা-মৃত আব্দুল লতিফ পাঠান, সাং- কালিকাপুর ৩। মোঃ শফিকুল ইসলাম (২৮), পিতা- বানু প্রামানিক, সাং- দিয়াপাড়া সর্ব থানা বড়াই গ্রাম জেলা নাটোর।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, এই অজ্ঞান পার্টির সক্রিয় সদস্যরা দীর্ঘদিন যাবত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার চোখ ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় এই ধরনের নেশাজাতীয় দ্রব্য পান করিয়ে বাসে থাকা যাত্রীদের অজ্ঞান করে সর্বস্ব হাতিয়ে নিত।
গ্রেফতারকৃত অজ্ঞান পার্টির সক্রিয় সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করত উদ্ধারকৃত আলামতসহ তাহাদেরকে নাটোর জেলার গুরুদাশপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
র্যাব-১২’র মিডিয়া অফিসার সহকারী পুলিশ সুপার মিঃ জন রানা এ তথ্য নিশ্চিত করেন, তিনি আরও বলেন এ ধরণের অজ্ঞান পার্টির সক্রিয় সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযান সচল রেখে মাদকমুক্ত সোনার বাংলা গঠনে র্যাব-১২ বদ্ধপরিকর।
র্যাব-১২ কে তথ্য দিন – মাদক , অস্ত্রধারী ও জঙ্গিমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে অংশ নিন।